অপারেশন রেসকিউ

 

অপারেশন রেসকিউ
লেখক : নাসির আহমেদ কাবুল
মূল্য : ২০০ টাকা


একটুখানি  পড়ুন

আজকের দিনটা খুব সুন্দর। চারদিকে চকচকে রোদ। ঝিরিঝিরি বাতাস। ধানের নবীন চারাগুলো দুলছে আপন মনে। কিন্তু আমার মন ভালো নেই—একেবারেই না। কী করে মন ভালো থাকে? বাবা আজ সকালে সবগুলো ঘুড়ি ও লাটাই ভেঙে তছনছ করে দিয়ে বলেছেন, আমাকে আর কোনোদিন ঘুড়ি ওড়াতে দেবেন না! অথচ ঘুড়ি না ওড়ালে আমার দিন কাটবে কেমন করে! আমি তো আর ফুটবল, হা-ডুডু খেলতে যাই না। সাঁতার কাটতেও নদীতে ঝাঁপ দেই না। স্কুল আর লেখাপড়া ছাড়া আমার তো আর সময় কাটাবার কোনো পথই রইলো না!

মা বললেন, ঘুড়ি না ওড়াস তাতে কী? বই পড়বি। 

বললাম, পড়িই তো! বাংলা, ইংরেজী, ইতিহাস, ভূগোল, দস্যু বনহুর, বাহরাম বাদশা আরও কতো কী বই পড়ি আমি!

মা বললেন, তার তো এই নমুনা! পর পর দু-বছর একই ক্লাসে রয়ে গেলি! আচ্ছা অনিন্দ্য, লোকের কাছে মুখ দেখাই কী করে বল তো?

অতোশতো ভেবো না তো মা। আগামী বছর ঠিকই পাস করে নেবো।

মা আমার কথায় খুশি হতে পারলেন বলে মনে হলো না।

বাবাকেই-বা দোষ দেই কী করে। এই নিয়ে দু-দুবার ক্লাস এইটে ফেল করলাম আমি। আর তরুণ, মোস্তাক, নূরু, শান্ত ওরা তর-তর করে উপরের ক্লাসে উঠে গেলো। আর আমি? নিজের উপর খুব রাগ হলো আমার। বাবা না, মাও না, নিজের উপর রাগ করেই ঘর থেকে বের হলাম আমি।

সকাল থেকে সন্ধ্যা এখানে-ওখানে ঘুরলাম। মন খারাপ করে নদীর ঘাটে বসে রইলাম। টিপ-টিপ বৃষ্টির কারণেই আজ হয়তো খেয়াঘাটে লোকজন খুব একটা নেই। তবুও পরিতোষ খেয়ানৌকা নিয়ে বসে আছে। পরিতোষ অবিনাশের ছোটো ভাই। বয়সে অবিনাশের চেয়ে তিন বছরের ছোটো। অবিনাশ আমার বন্ধু। প্রাইমারি স্কুলে একই ক্লাসে পড়তাম আমরা।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url