কালো বিড়াল লাল চোখ


কালো বিড়াল লাল চোখ
লেখক : নাসির আহমেদ কাবুল
মূল্য : ২৭০ টাকা।

একটুখানি পড়ুন

অবনী বাউল অনেক দিন ধরে ঢাকা শহরে সস্তায় একটি বাড়ি কেনার অপেক্ষায় ছিলেন। সরকারি চাকরি শেষে বেনিফিটের জমানো টাকা দিয়ে খুব ভালো একটি বাড়ি কেনা সম্ভব নয়। কম দামে খারাপ বাড়ি কেনার রুচিতেও বাধছিলো তার। হতাশ অবনী বাউল একদিন পত্রিকায় বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখে দেরি না করে পুরানো ঢাকার লক্ষ্মীবাজার চলে গেলেন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে। স্ত্রী পূরবী বাউল বাড়িটি পছন্দ করলেন। দরদাম ঠিক হলো। সাধ্যের মধ্যে বাড়ি। পুরানো হলেও পছন্দ হলো বাড়িটি।
বাড়িটি দোতলা। নিচতলায় কয়েকটি দোকান। ওগুলো বিক্রি হয়ে গেছে আগেই। অবনী বাউল শুধু দোতলাটা কিনলেন। তবে ইচ্ছে করলে তিনি নতুন বিল্ডিং করতেও পারেন। ইচ্ছে হলে দোতলার উপরে আরো একতলা বাড়িয়ে নিতেও পারেন। অর্থাৎ পুরো বাড়িটিই তার, শুধু নিচের দুটি দোকান বাদ দিয়ে।
তিনটি শোবার ঘর। একটি হলরুম। দুটি ওয়াশরুম। কিচেন ও দক্ষিণ দিকে একটি বারান্দার বাড়িটি খুব পছন্দ হলো স্বামীস্ত্রী দুজনেরই। বাড়িটি অনেকদিন পর্যন্ত অব্যবহৃত পরে আছে। ওয়ালের পলেস্তরা উঠে গেছে। 
চটজলদি মিস্ত্রি নিয়ে এলেন অবনি বাউল। দরকারি জিনিসপত্র কিনে দিলেন দ্রুত বাড়িটি ঠিক করার জন্য। দেখতে দেখতে সাত দিনের মধ্যে বাড়িটি নতুন চেহারা ফিরে পেলো। একদিন শুভক্ষণ দেখে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুদের নিয়ে নতুন বাড়ি উদ্বোধন করলেন অবনী বাউল। সন্ধ্যায় গল্পগুজব, খানাপিনা ও গানের জলসা শেষ করতে রাত প্রায় বারোটা বেজে গেলো। বিছানায় শুয়েই স্ত্রী পূরবী বাউল ঘুমিয়ে পড়লেন। কিন্তু অবনী বাউলের ঘুম আসছিল না কিছুতেই। বিছানা থেকে নেমে তিনি দক্ষিণ দিকের প্রশস্ত ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালেন। ব্যালকনির সামনের বেশ কয়েকটা প্লটে টিন ও একতলা দালান। এ কারণে এখানে দাঁড়ালে আকাশটা খুব দেখা যায়। আকাশে চাঁদ, তারা-ঝিলিমিলে রাত। দক্ষিণ দিকে থেকে ধীরে ধীরে বাতাস আসছে। দূরে কোথাও থেকে উর্দু গানের সুর ভেসে আসছে। পরিচিত সুর। কিন্তু গানের কথা মনে পড়ছে না অবনী বাউলের। গানের সুরে অনেকক্ষণ পর্যন্ত তন্ময় হয়ে পড়েছিলেন তিনি। হঠাৎ মনে হলো তার পিঠের ওপর কারো হাতের আলতো পরশ! মনের ভুল মনে করে শোবার ঘরে চলে গেলেন। 
বিছানায় শুয়ে ব্যালকনিতে পিছনে কারো না কারো হাতের স্পর্শের কথা ভুলতে পারলেন না তিনি। একবার মনে হচ্ছে সবটাই ভুল, আবার পরক্ষণেই মনের মধ্যে কেমন অস্থিরতায় পেয়ে বসছে তাকে। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লেন তিনি।
সকালে নাস্তার টেবিলে পুরবী বাউল স্বামীকে বললেন, জানো কাল রাতে একটা দুঃস্বপ্ন দেখেছি আমি।
চমকে উঠলেন অবনী বাউল।


 

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url