তিন রসিকের হাসির গল্প



তিন রসিকের হাসির গল্প
সম্পাদনা : নাসির আহমেদ কাবুল
মূল্য : ২০০ টাকা 
স্টক আউট
 
একটুখানি  পড়ুন
মোল্লার অংক কষা

অংকটা কিছুতেই পারছিলো না দেখে পাড়ার একটি ছেলে মোল্লা নাসিরউদ্দিনের কাছে অংকটা বুঝতে এসেছিলো। মোল্লা আবার ওই একটা ব্যাপারে এক্কেবারে যাকে বলে দিগ্গজ প-িত।
ছেলেটির কাছে ছোট হওয়া যায় না। তিনি বিজ্ঞের মতো বললেন, বল কোন অংকটা তুই বুঝতে পারছিস না?

ছেলেটি বললো, একটা ঝুড়িতে পঞ্চাশটা কমলালেবু ছিলো। পনেরোজন ছাত্রকে একটা করে দিতে হবে। ঝুড়ি খুলে দেখা গেলো তার মধ্যে দশটা কমলা পচে গিয়েছে, তাহলে কয়টা কমলা কম বা বেশি হবে?
একটু মাথা চুলকিয়ে নাসিরউদ্দিন বললেন, অংকটা কে দিয়েছে তোকে?
ছেলেটি বললো, মাস্টারমশাই।
মোল্লা বললো, তোর কেমন স্কুল রে! এমন বাজে অংক দিয়েছে? আর তোর মাস্টারমশাইয়েরও জ্ঞানবুদ্ধি একেবারেই নেই। আমাদের ছেলেবেলায় এরকম অংক কখনও দিতো না। আমাদের অংক থাকতো আপেল নিয়ে। কমলালেবু তো পচবেই। আপেল হলে পচতো না। আর অংকটাও তাহলে সোজা হতো। যেমন তোর পচা মাস্টারমশাই, তেমনি পচা অংক। এখন কেটে পড় দেখি, কমলালেবুর কি বিচ্ছিরি গন্ধ বেরুচ্ছে!
ছেলেটি আর কী করে! অংক না করেই বাড়ি ফিরে গেলো।

বুদ্ধির পরিচয়
মোল্লা নাসিরউদ্দিন একবার ব্যবসা করতে বিদেশে গিয়েছেন। ব্যবসা করতে গিয়ে এতো লোকসান হয়েছে যে, হাতে তার একটি টাকাও নেই। এমন অবস্থা যে, খাওয়াও জুটছে না। বিদেশে কে আর তাকে সাহায্য করবে! এদিকে খুব খিদে পেয়েছে মোল্লার।
 মোল্লা রেস্টুরেন্টে ঢুকে দেখলো একজন রুটি, মাংস ও আরও অনেক ভালো ভালো খাবার খাচ্ছে। মোল্লা লোকটির কাছে গিয়ে বসলো। বললো, আমি আপনার গ্রাম থেকে এসেছি।
লোকটি খেতে খেতে জিজ্ঞেস করলো, আমার বাড়ির সব খবর ভালো তো?
নাসিরউদ্দিন বললো, আজ্ঞেÑহ্যাঁ।
লোকটি বললো, কুকুর, উট, বিবি-বেটা এরা সবাই ভালো আছে তো?
মোল্লা দুঃখ করে বললো, না জনাব, আপনার কুকুরটা মারা গেছে।
Ñকী করে মরলো জানেন?
Ñআপনার উটের পচা মাংস খেয়ে।
Ñঅমন উটটা আমার মারা গেলো! কী করে মরলো?
Ñআপনার বিবির জন্য।
Ñকেন আপনার বিবি কী করছিলো?
মোল্লা বললো, সবটা না বললে আপনি বুঝতে পারবেন না। আপনার উটটা দড়ি দিয়ে একটি আংটার সঙ্গে বাঁধা ছিলো। আপনার বিবি ওই দড়িতে ঝুলে আত্মহত্যা করলো আর এমন কপাল যে, লাশটা এসে উটের উপর পড়তেই উটটা মারা গেলো।
লোকটি অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করলো, কিন্তু এমন কী ঘটলো যে আমার বিবি আত্মহত্যা করলো?
মোল্লা বললো, তারও কারণ আছে, আপনার ছেলেটা যে পানিতে ডুবে মারা গিয়েছে।
বাড়ির এসব দুর্ঘটনার কথা শুনে লোকটির আর খাওয়া হলো না। খাবার রেখেই সে বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলো। মোল্লা তখন সেই খাবার খেয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে পেটে হাত বুলোতে বুলাতে বেরিয়ে গেলেন।



অভিশাপ
মোল্লার একজনের সঙ্গে শত্রুতা ছিলো। একদিন মোল্লা বাড়িতে ছিলেন না। এই সুযোগে সে মোল্লার ঘরে ঢুকে সব জিনিসপত্র তছনছ করে ঘরের মধ্যেই লুকিয়ে রইলো। মোল্লা ঘরে এসে ঘরের এমন অবস্থা দেখে কী করে সেটা দেখার জন্য। 
মোল্লা নাসিরউদ্দিন বাড়িতে ঢুকে জিনিসপত্রের এমন অবস্থা দেখে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন। রাগে-দুঃখে তিনি অভিশাপ দিলেন যে, আমার এমন ক্ষতি যে করেছে, সাতদিনের মধ্যে তার যেন পা ভাঙে।
এরপর সেখান থেকে পালাতে গিয়ে লোকটির পা ভেঙে গেলো। লোকটি খোঁড়াতে খোঁড়াতে মোল্লার সামনে এসে বললো, মোল্লা সাহেব, আপনার অভিশাপ ফললো না। আপনি বললেন, সাতদিন পর পা ভাঙবে, তাহলে আজ ভাঙলো না কেন?
মোল্লা বললেন, আজ যে পা ভেঙেছে সেটা অন্য কারও অভিশাপের ফল। সাতদিন পর আমার অভিশাপ যখন ফলবে, তখন আর খুঁড়িয়ে আসতে হবে না, হামাগুড়ি দিয়ে আসতে হবে।


 



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url