পর্ব৫
দুপুরের খাবারের পর আকমল সাহেবের ভাতঘুমের অভ্যাস কিন্তু আজ ঘুমটা আগেই হয়ে গেছে।শুয়ে আছেন দেয়ালের দিকে মুখ করে।এতগুলো বছর পেরিয়ে আজ মনে হচ্ছে, দেয়ালে যদি মধুমিতার একটা ছবি টানানো থাকত! কিছু সুখের স্মৃতি মনে করে হয়ত সময় কাটানো যেত। বসার ঘরে বাবা,দাদার ছবি আছে,মায়ের ঘরে মায়ের ছবি কিন্তু এই ঘরের দেয়াল ফাঁকা।পরন্তবেলায় নিজেকে আজ বড় একা একা লাগে!মধুমিতাকে ছাড়া সময়ের পাতায় অনেকগুলো বছর কিন্তু পাশাপাশি এটাও মনে হয় এইতো সেদিন!রূপবতী ঐ মেয়েটির সঙ্গে ভারসিটির চত্বরে প্রথম দেখা, নিজে এড়িয়ে চলার পরেও রূপগুণে মুগ্ধ হয়ে কিভাবে যেন গভীর প্রণয়ে জড়াতে হলো! আবেগ আকুতির সে প্রেম ছিল জলের মতো স্বচ্ছ,ঝর্ণার মতো উচ্ছ্বল! অথচ আকমল সাহেব দেখেছেন স্বচ্ছ জলও ঘোলা হয়ে যেতে!
হঠাৎ দরজার ওপাশ থেকে ফজর আলীর হাঁক…
– কর্তা সদরে যাইতেছি বাজার সওদা আনতে, আপনের কিছু লাগব?
– আমার কী লাগবে মানে? ফুলবানু কোথায়?
– না কইছিলাম যে আপনের নিজের কিছু লাগব কি না?
– না কিছু লাগবে না।
একটু মেজাজ দেখিয়ে বললেন আকমল সাহেব।
মানুষ যখন তার নিজের জগতে পায়চারী করে তখন সে ধ্যান ভঙ্গ হলে বোধকরি মনের অজান্তেই রেগে যায়।ফজর আলী চলে যাবার পর আকমল সাহেবের মনে হলো তার সিগারেট শেষ হয়ে গেছে! আসপাশের দোকানে তার সিগারেট পাওয়া যাবে না!
সিগারেট নেই জেনেও প্যাকেট থেকে শেষ শলাটা বের করে লাইটার নিলেন।হঠাৎ মনে পড়ল তার একটি পছন্দের লাইটার ছিল!মধুমিতার মৃত্যুর পর সেটি তিনি বুড়িগঙায় ফেলে দিয়েছেন।বিশেষ লাইটারটি বিয়েরদিন রাতে তাকে মধুমিতা দিয়েছিল। বেশির ভাগ মেয়েদের নিকোডিনের গন্ধ সহ্য হয় না কিন্তু মধুমিতা আকমল সাহেবের সিগারেটের অভ্যাসটা বেশ উপভোগ করত।
৪ thoughts on “প্রায়শ্চিত্ত”
মন্তব্য করুন
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।
বেশির ভাগ মেয়েদের নিকোডিনের গন্ধ সহ্য হয় না কিন্তু মধুমিতা আকমল সাহেবের সিগারেটের অভ্যাসটা বেশ উপভোগ করত।- হইত ভালো লাগত বা ভালোবাসার ভালোবাসায় পেতো। ভালো বাসলে অনেক কিছুই অপছন্দনীয় পছন্দে রুপ নিত।
খুব ভালো লাগল আপনার লিখা পড়ে মাঝে মাঝে ডুবেই ছিলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ কবি।
আন্তরিক ধন্যবাদ কবি।
পঞ্চম পর্বে এসে আরও উপভোগ্য হয়ে উঠেছে গল্পটি। শুভেচ্ছা আপু।
আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ভাইয়া।