চিরন্তন কথা—
‘কপাল’ ‘কপাল’ করে বনেজঙ্গলে ঘুরলে কপাল প্রসন্ন হয় না। কপাল ভালো হয় বুদ্ধির জোরে। মান ত একটা প্রত্যেক জিনিসেরই থাকে এবং আছে তবে থাকলেও সব ত আর মানী হয় না, তদ্রূপ জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও সকলে জ্ঞানী হন না। অনেক শিক্ষিতদের মধ্যেও দেখা যায় বিবেকহীন কাজ করতে! সবকিছু কপালের উপর নির্ভর করা যেমন চলে না আবার সবকিছুতে কপালের দোষ দেওয়াও ঠিক না। ‘ভালমন্দ কপালের লিখন’ ঠিক আছে তবে স্বভাবচরিত্র কপালের লেখা নয়। ভাগ্যে যা আছে ঘটুক—চোখবুজে দিলাম ঝাঁপ আগুনে, হাসি…আমি কোন্ মহাপুরুষ ভাই রক্ষা করবেন রক্ষাকারী? আগে আমার আমিকে বুঝতে হবে এবং ভালভাবে জানতে হবে, তারপর খুঁজতে হবে বাঁচার রাস্তা; তারপর পথ দেখালেও দেখাতে পারেন দিশারি। এককথায়—আমার আমিকে বুঝতে অক্ষম হলে, সবকিছুকে বুঝা অক্ষম।
‘অদৃষ্টের লিখন খণ্ডানো যায় না’ তবে কিছু কর্মগুণে অদৃষ্টই বদলে যায়। বিধি ভাগ্যের রচয়িতা কিন্তু মানুষ কর্মের স্রষ্টা। মনে রাখা দরকার চিরন্তন কথা—ভালো কর্মের ফল সব সময়ই ভালো। কাকে মারতে গেলে নিজেই মরতে হয়। কাকে আঘাত করলে নিজেই আঘাতী হতে হয়। অপমানের দরদ সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। কখনো কাউকে লাঞ্ছিত করা ঠিক না। কখনো কিছু অবহেলা করাও ঠিক নয়। একটি গাছ থেকে লক্ষ দিয়াশলাইয়ের কাঠি বনতে পারে, আবার একটি কাঠি লক্ষ গাছেরও বিনাশক হতে পারে। সুতরাং কাউকে ক্ষুদ্র ভাবতে নেই। আমি দেখছি ছয়, তুমি দেখছ নয়। আমি আমার জায়গাতেই ঠিক, তুমি তোমার জায়গাতেই সঠিক। তবে? ভুল-শুদ্ধের বিচার তখনই করা যায় বা যাবে যখনই তুমি আমার জায়গায় আমি তোমার জায়গায় অবস্থান করি বা করব। চোখের দেখাও সব সময় শুদ্ধ নয়। ভুল আর শুদ্ধ বুঝতে হলে জায়গা পরিবর্তন অতীব জরুরি। কাকে এক আঙুল দেখাতে গেলে নিজের দিকে তিন আঙুল তাক করে থাকে। হাতির পায়ের নিচে পিষ্ট হয়ে হাজার পিপীলিকা একবারে মারা যায় কিন্তু কখনো আবার একটি পিঁপড়া হাতির মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কাজেই নিজেকে ক্ষমতাবান বা শক্তিশালী মনে করাও ভুল। চাল এখন তোমার হাতে একটুপর আমার হতে দেরি নেই। আজ তুমি রাজা—রাজত্ব তোমার—কিন্তু, মনে রাখবে, সময় স্থির নয়—প্রকৃতি পাল্টে যায় মুহূর্তেই। কারো ক্ষতি করে নিজের পথ সুগম করার মতো অপরাধ আর কিছু নেই। সৎপথ অবলম্বন করা কঠিন তবে অসৎপথে চলা মারাত্মক অন্যায়। এ জিন্দেগি বড়ই ক্ষীণ। এখানে অমরত্ব লাভ করা যেমন যায় না তদ্রূপ অমরকীর্তি সৃষ্টি করাও সহজ না।
চলবে…
তবুও কেউ কেউ অমর হয়। খুব ভালো লেখা।
অনেক ধন্যবাদ ও আন্তরিকতা…ওখানে আমি সৃষ্টির মাধ্যমে অমর হওয়ার কথা বলছি না দাদা, আমি বলতে চেয়েছি প্রাণে অমরত্ব লাভের কথা। সৃষ্টির মাধ্যমে সে ত যেকেউই হতে পারে…
বাস্তবতার আদলে আপনার লেখা বরাবরই চমৎকার! আপনার লেখা পাঠে গভীর ভাবনার উৎপত্তি হয়।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ও অশেষ আন্তরিকতা…
অতিব সত্য কথন। কিন্তু বলে কথা আছে। সকলের সব উপলধি করার সক্ষমতা থাকে না। শিক্ষিত বা মুর্খ কার কখন ভাবনার উদয় হবে স্রষ্টায় ভালো জানে।
অশেষ ধন্যবাদ ও আন্তরিকতা…